ইউনাইটেড এগ্রো
চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলার ‘ইউনাইটেড এগ্রো’র এই মিশ্র ফল বাগানটি পতিত জমির সুষ্ঠু ব্যবহারের এক অনন্য উদাহরণ। স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ ফিরোজ খান ২০১৬ খ্রি. ৪ একর জমিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতায় এই মিশ্র ফল বাগানটি স্থাপন করেন। তার পূর্বে তিনি ২০১৩ সালে এই জমিটি ক্রয় করেন তখন এটি একটি পরিত্যক্ত পাহাড় হিসেবে পতিত ছিল যাতে কৃষি কাজ করা যায় বিশেষ করে ফলবাগান স্থাপন করা যায় তা ছিল অনেকের কাছে কল্পনাতীত। কিন্তু কৃষকের পরিশ্রম ও কৃষিবিদদের কারিগরী সহায়তায় এটি এখন হয়ে উঠেছে ফলে ভরপুর। শখের বসে স্থাপন করা মিশ্র ফল বাগানকে নিয়ে কৃষক ফিরোজ খান এখন স্বপ্ন দেখছে এটিকে বাণিজ্যিক কৃষি খামারে পরিণত করার। স্থাপনের পর তার ধারণা ছিল হয়তো এখান থেকে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করা যাবে এবং জমিটি তার দখলে থাকবে কিন্তু গত বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব করে তিনি এখন ভাবছেন তার অন্য পতিত জমিগুলোতেও বাণিজ্যিক ফল বাগান স্থাপন করবেন। শুধু তাই নয়, তার বাগানে বিশেষ করে আমের যে বৈচিত্র্যতা রয়েছে তা দেখে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছে এই ধরণের বাগান স্থাপনে। তার এই বাগানের পণ্য বাজারজাত করে থাকেন সিরাজ উদ্দিন মাসুদ যাকে গ্রাহকরা চিনে এক ব্যতিক্রমি ফল ব্যবসায়ী হিসেবে তার ফল গুলোর গুনগত মান ভাল হওয়ায় ফল ব্যবসায়ীরাও ক্রয় করে অধিক লাভে বিক্রি করতে সক্ষম হচ্ছে। বর্তমানে তার পরিকল্পনা হচ্ছে চাহিদা সম্পন্ন ফলের চারা রোপণ করে কিভাবেআরো বেশী করে লাভবান হওয়া যায়। এই বাগানে কিছু ব্যতিক্রমধর্মী আম রয়েছে যা দেখতে আকর্ষনীয় ও স্বাদে সুমিষ্ট। তার মধ্যে “চমক” জাতটি অন্যতম, যদিও এটি আসলে কি জাত এ নিয়ে মতের ভিন্নতা রয়েছে তবে তা নিঃসন্দেহে সম্প্রসারণ যোগ্য তাই গত বছর থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিসারগণ বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং এরই মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হুদা ২ (দুই) বার এই বাগানটি পরিদর্শন করেছেন। এই বছরের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ শেষে তা থেকে গ্রাফটিং এর মধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে তা উপযোগীতা যাচাই করার পাশাপাশি চট্টগ্রাম অঞ্চলে তা সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে এই বাগানে ৯৫ টি ফলন্ত আম গাছ, ৯৮ টি ড্রাগন, ২০০ টি মাল্টা, ৮০ টি পেয়ারা গাছ ফলন্ত অবস্থায় রয়েছে যা থেকে গত বৎসর তিনি আয় করেন ৪,০৫,০৫০/- (চার লক্ষ পাঁচ হাজার পঞ্চাশ) টাকা। উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে এই বাগানটি আরো লাভজনক হয়ে উঠবে এটিই সকলের প্রত্যাশা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস